১১:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্লাড ক্যান্সারকে জয় করে বিসিএস ক্যাডার হলেন শালিখার প্রিয়াঙ্কা রায়

সুজয় কুমার বিশ্বাস,,শালিখা প্রতিনিধি
  • Update Time : ১২:২০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৯০ Time View

 

যে দেশে মানুষ ব্লাড ক্যান্সারের নাম শুনলেই মনে করে জীবন শেষ,সেই দেশে প্রিয়াংকা রায় নামের এক মেয়েটি সবার মুখে চপেটাঘাত করে দেখিয়েছে—
“আমি হার মানবো না!”

যবিপ্রবির ফার্মেসি বিভাগের সেই মেধাবী ছাত্রী,
যে একের পর এক সেমিস্টারে ৪.০০ সিজিপিএ তুলে নিজের জায়গা তৈরি করেছিল—
তার পথ থেমে গিয়েছিল একিউট লিউকেমিয়ার মতো ভয়ংকর রোগে।

৩ জুলাই ২০১৯—
একটি রিপোর্ট তার পুরো ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল।
২৫ লাখ টাকার চিকিৎসা—
একজন স্কুলশিক্ষকের পক্ষে অসম্ভব!
তবুও বাবা হাল ছাড়েননি।
বন্ধুরা হাল ছাড়েনি।
বিশ্ববিদ্যালয় হাল ছাড়েনি।

মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চার মাসের যুদ্ধ শেষে প্রিয়াংকা আগের চেয়েও শক্ত হয়ে ফিরে এসেছে।
চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড বা পিএম অ্যাওয়ার্ড না পাওয়ার আফসোস তার বুকের মধ্যে আগুন হয়ে জমে ছিল।

আর সেই আগুন নিয়েই সে সিদ্ধান্ত নিল—
“আমি বিসিএস ক্যাডার হব—যেভাবেই হোক!”

কোচিং নয়, শর্টকার্ট নয়—
শুধু মেধা, সাহস আর নিজের ওপর বিশ্বাস।
প্রিলি—পাস।
লিখিত—পাস।
এদিকে সোনালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবেও নিয়োগ পেল।

এবং শেষমেশ—
৪৫তম বিসিএসের ফলাফলে ঘোষণা—
প্রিয়াংকা রায়, কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ ক্যাডার!

একজন মেয়ের হাতে শুধু চাকরি নয়—
তার নিজের জীবনের জয়ের পতাকা উঠেছে।

তার পরিবার শুধু চাইছিল সে বেঁচে থাকুক—
আজ সে শুধু বেঁচে নেই,
সে জিতেছে… এবং জিতেই দেখিয়েছে।

প্রিয়াংকার ঘোষণা স্পষ্ট—
“শরীর ভাঙলেও স্বপ্ন ভাঙবে না।
সাহস থাকলে মহামারীও পথ আটকাতে পারে না।”

আজ প্রিয়াংকা রায় হাজারো তরুণ–তরুণীর মুখে সাহসের নাম—
সংগ্রাম করলেই জয় আসে—
এই সত্যের জীবন্ত প্রমাণ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ব্লাড ক্যান্সারকে জয় করে বিসিএস ক্যাডার হলেন শালিখার প্রিয়াঙ্কা রায়

Update Time : ১২:২০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫

 

যে দেশে মানুষ ব্লাড ক্যান্সারের নাম শুনলেই মনে করে জীবন শেষ,সেই দেশে প্রিয়াংকা রায় নামের এক মেয়েটি সবার মুখে চপেটাঘাত করে দেখিয়েছে—
“আমি হার মানবো না!”

যবিপ্রবির ফার্মেসি বিভাগের সেই মেধাবী ছাত্রী,
যে একের পর এক সেমিস্টারে ৪.০০ সিজিপিএ তুলে নিজের জায়গা তৈরি করেছিল—
তার পথ থেমে গিয়েছিল একিউট লিউকেমিয়ার মতো ভয়ংকর রোগে।

৩ জুলাই ২০১৯—
একটি রিপোর্ট তার পুরো ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল।
২৫ লাখ টাকার চিকিৎসা—
একজন স্কুলশিক্ষকের পক্ষে অসম্ভব!
তবুও বাবা হাল ছাড়েননি।
বন্ধুরা হাল ছাড়েনি।
বিশ্ববিদ্যালয় হাল ছাড়েনি।

মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চার মাসের যুদ্ধ শেষে প্রিয়াংকা আগের চেয়েও শক্ত হয়ে ফিরে এসেছে।
চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড বা পিএম অ্যাওয়ার্ড না পাওয়ার আফসোস তার বুকের মধ্যে আগুন হয়ে জমে ছিল।

আর সেই আগুন নিয়েই সে সিদ্ধান্ত নিল—
“আমি বিসিএস ক্যাডার হব—যেভাবেই হোক!”

কোচিং নয়, শর্টকার্ট নয়—
শুধু মেধা, সাহস আর নিজের ওপর বিশ্বাস।
প্রিলি—পাস।
লিখিত—পাস।
এদিকে সোনালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবেও নিয়োগ পেল।

এবং শেষমেশ—
৪৫তম বিসিএসের ফলাফলে ঘোষণা—
প্রিয়াংকা রায়, কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ ক্যাডার!

একজন মেয়ের হাতে শুধু চাকরি নয়—
তার নিজের জীবনের জয়ের পতাকা উঠেছে।

তার পরিবার শুধু চাইছিল সে বেঁচে থাকুক—
আজ সে শুধু বেঁচে নেই,
সে জিতেছে… এবং জিতেই দেখিয়েছে।

প্রিয়াংকার ঘোষণা স্পষ্ট—
“শরীর ভাঙলেও স্বপ্ন ভাঙবে না।
সাহস থাকলে মহামারীও পথ আটকাতে পারে না।”

আজ প্রিয়াংকা রায় হাজারো তরুণ–তরুণীর মুখে সাহসের নাম—
সংগ্রাম করলেই জয় আসে—
এই সত্যের জীবন্ত প্রমাণ।