গরম পানিতে পড়ে দগ্ধ শিশু, চিকিৎসায় শেষ সম্বল বিক্রি; চাকরি হারালেন মা
- Update Time : ০২:১৯:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৬৯ Time View

বাগেরহাটের রামপালে গরম পানিতে পড়ে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে দুই বছর বয়সী শিশু সুমাইয়া। মেয়েকে বাঁচাতে চিকিৎসার পেছনে সর্বস্ব খরচ করতে গিয়ে বাবা বিক্রি করেছেন পরিবারের শেষ সম্বল গরু, আর দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার কারণে চাকরি হারিয়েছেন মা।
গত ২৯ নভেম্বর সকালে রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামে নিজ বাড়ির উঠানে খেলতে গিয়ে গরুর জন্য রাখা গরম পানির পাত্রে পড়ে যায় সুমাইয়া। এতে শিশুটির শরীরের প্রায় ৩৬ শতাংশ দগ্ধ হয়।
গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাকে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। বর্তমানে শিশুটি সেখানে টানা ১৯ দিন ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়ার বাবা দিনমজুরির পাশাপাশি মাঝে মাঝে সাগরে মাছ ধরার কাজ করেন। শিশুটির মা একটি গার্মেন্টসে কর্মরত ছিলেন। তবে মেয়ের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ সময় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে পরিবারটি তাদের শেষ সম্বল একটি গরু বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের চিকিৎসা খরচ জোগানো এখন পরিবারটির পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার কারণে পরিবারটি চরম অর্থ সংকটে পড়েছে।
রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুকান্ত কুমার পাল বলেন, “শিশুটির দগ্ধের মাত্রা বেশি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় এবং উল্লেখযোগ্য অর্থ ব্যয় প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজ তামান্না ফেরদৌসী জানান, “নির্ধারিত নিয়মে আবেদন করলে পরিবারটি সরকারি সহায়তা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।”
এদিকে, অসহায় শিশুটির পরিবার মানবিক ও বিত্তবান মানুষের সহানুভূতি ও সহযোগিতা কামনা করেছে। তাদের আশা, সমাজের সহৃদয় মানুষের সহায়তায় ছোট্ট সুমাইয়ার জীবন আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।


















