রামপালের তরুণ লেখক আশরাফুলের ‘চিরকুট’: এক টুকরো কাগজে একগুচ্ছ অনুভূতির গল্প
- Update Time : ১০:১২:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৯৯ Time View

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের এক নিভৃত পল্লী থেকে উঠে এসেছেন তরুণ প্রতিভাবান লেখক আশরাফুল ইসলাম। অত্যন্ত অল্প বয়সে হাতেখড়ি হওয়া এই মেধাবী তরুণ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “চিরকুট : একটুকরো কাগজে একগুচ্ছ অনুভূতি” দিয়ে পাঠকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।
লেখালিখির শুরু ও অনুপ্রেরণা:
আশরাফুলের শিক্ষার হাতেখড়ি মাত্র ৪ বছর বয়সে। প্রখর মেধার অধিকারী এই তরুণ বরাবরই ক্লাসে বয়সের তুলনায় এগিয়ে থাকতেন। বই পড়ার প্রতি গভীর অনুরাগ থেকেই তাঁর লেখালেখির সূচনা। নিজের অনুভূতির কথাগুলো যখন কাগজে সাদা-কালো অক্ষরে রূপ দিচ্ছিলেন, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। তাঁর সেই উৎসাহই আজ আশরাফুলকে একজন লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সাহায্য করেছে। গত দুই বছরের জমানো এবং সাম্প্রতিক কিছু শ্রেষ্ঠ লেখার সংকলনই হলো তাঁর এই বই।
বইয়ের প্রেক্ষাপট:
“চিরকুট” বইটি মূলত বর্তমান সময়ের আধুনিক ভালোবাসা এবং পুরনো দিনের চিরকুটের আবেগের এক মেলবন্ধন। এতে যেমন আছে ভালোবাসার পরশ, তেমনি আছে বিচ্ছেদ, বেদনা এবং বর্তমান সমাজের এক বড় সংকট—বেকারত্বের গল্প। বইটিতে ‘ছোটবেলার চিরকুট’ নামক একটি অনুগল্প রয়েছে, যা লেখকের ব্যক্তিগত পছন্দের অন্যতম। লেখক বলেন, “বইটি পড়ার সময় প্রতিটি পাঠকের মনে হবে, এ যেন তাদেরই জীবনের কোনো না কোনো অধ্যায়।”
সংগ্রাম ও সাফল্যের নেপথ্যে:
একজন নতুন লেখকের পথ চলা সবসময় মসৃণ হয় না। আশরাফুলের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বই প্রকাশের স্বপ্নযাত্রায় সবচেয়ে বড় অবলম্বন হয়ে পাশে ছিলেন তাঁর কাকু এবং মা। শুরুতে বাবা কিছুটা সংশয় প্রকাশ করলেও, বই প্রকাশের পর এবং পাঠকদের ব্যাপক সাড়া দেখে এখন তিনিও ছেলের সাফল্যে গর্বিত। এলাকাবাসীর অফুরন্ত দোয়া ও ভালোবাসায় সিক্ত আশরাফুল এখন আগামীর স্বপ্ন বুনছেন।
তরুণদের প্রতি বার্তা:
মোবাইল আসক্তির এই যুগে তরুণ সমাজকে জ্ঞানচর্চায় ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি মনে করেন, আজকের তরুণরা যদি মোবাইল আসক্তি কমিয়ে বই পড়া ও সৃজনশীল কাজে মনোনিবেশ করে, তবেই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব। নতুন লেখকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি চাই না কোনো লেখক একা অনুভব করুক। লেখালেখি নিয়ে যে কোনো সহযোগিতায় আমি সবসময় পাশে আছি।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
আসন্ন অমর একুশে বইমেলা ২০২৬-কে সামনে রেখে আরও বড় পরিসরে পাঠকদের সামনে হাজির হতে চান তিনি। নিজেকে খুব বড় কিছু ভাবেন না এই বিনয়ী তরুণ; পাঠকদের নিখাদ ভালোবাসাই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সুস্থ থাকলে ভবিষ্যতে আরও মানসম্মত সাহিত্য উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আশরাফুল ইসলাম।


















